নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকমঃ আগামীকাল (১৪ জানুয়ারী) মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় উদ্বোধন করা হবে মাসব্যাপী লোকজ ও কারুশিল্প মেলা। বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অধিনে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এ মেলার আয়োজন করে। মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর) সোমবার সকালে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন।
মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি পরিচালক রবিউল হোসাইন, ডিসপ্লে অফিসার আবুল কালাম আজদ, লেকচারার গাইড মুজ্জামেল মাসুদ প্রমুখ।
মত বিনিময় সভায় ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় মেলা উদ্বোধন করা হবে। মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনি আরো জানান, এবারের মেলার শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব পালন করা হবে।মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রয়ারী পর্যন্ত।
ফাউন্ডেশন সূূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এর মধ্যে নওগাঁও ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নক্শি পাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নক্শিকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নক্শি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁওয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্পসহ মোট ১৫৪টি স্টল থাকছে।
এছাড়াও লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজউৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে মেলার বিভিন্ন স্টলের দোকানীরা তাদের পন্য সাজাতে শুরু করেছেন। এছাড়া মেলার মুড়ি, মুরকির দোকান সাজিয়ে বসেছেন। যারা এখনও স্টল সাজাতে পারেননি তারা দোকান সাজানোর জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য।